নষ্টারডেমাস এর ভবিষ্যদ্বাণী ? নাকি আবু হুরায়রা রা. এর পাণ্ডুলিপি !

নষ্টারডেমাস"এর ভবিষ্যদ্বাণী ? নাকি আবু হুরায়রা রা. এর পাণ্ডুলিপি !!!


ভবিষ্যদর্শীদের মধ্যে আপনি নষ্টারডেমাসের উদ্ধৃতি অসংখ্যবার শুনে থাকবেন। ভবিষ্যদ্বাণীর ব্যাপারে তার উদ্ধৃতি খুব গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হয়ে থাকে। নষ্টারডেমাস খৃষ্টাব্দ পনেরদশক থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত ঘটিত সকল বিষয় সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছে। সাধারণত লোকমুখে একটি কথা প্রসিদ্ধ যে, তার অধিকাংশ ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং দাজ্জালের ব্যাপারেও তার ভবিষ্যদ্বাণী বিস্তারিতভাবে বিদ্যমান রয়েছে।


এখানে তার ভবিষ্যদ্বাণীগুলো বর্ণনা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়; বরং সমাজের শিক্ষিত শ্রেণীর লোকদেরকে একথার জানান দেয়া যে, যেসকল ভবিষ্যদ্বাণী স্বরচিত বলে সে প্রচার করেছে, আসলে সেগুলো কি বাস্তবেই তার রচিত ?? নাকি সে (নষ্টারডেমাস) নবী করীম সা. এর বাক্যসংরক্ষণকারী প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবূ হুরায়রা রা. এর পাণ্ডুলিপি থেকে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো চুরি করে হাদিসগুলোকে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছে।


সহীহ হাদিস দ্বারা একথা প্রমাণিত যে, নবী করীম সা. কেয়ামত পর্যন্ত ঘটিত সকল ঘটনা সাহাবায়ে কেরামের কাছে বর্ণনা করে গেছেন। হযরত হুযায়ফা রা. বলেন- একদা নবী করীম সা. আমাদের সামনে দাড়ালেন এবং কেয়ামত পূর্বের ঘটিত সকল ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ আমাদের সামনে পেশ করলেন। যারা নবী করীম সা. এর কথাগুলোকে স্মরণ রাখার ইচ্ছা করেছে, স্মরণ রেখেছে। যারা ভুলে গেছে, তাদেরকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। (আবূ দাউদ)


অন্য বর্ণনায় হযরত হুযায়ফা রা. বলেন- "আল্লাহ শপথ! রাসূলে কারীম সা. কেয়ামত পর্যন্ত ঘটিত এমন কোন ফেতনাকে ছাড়েননি, যা তিনি আমাদের সামনে বর্ণনা করেননি। এর সাথীদের সংখ্যা তিনশ বা তিনশ থেকে কিছু বেশি হবে। নবী করীম সা. ফেতনার বর্ণনার সময় ফেতনাসৃষ্টিকারীর নাম, তার পিতার নাম এমনকি তার গোত্রের নামও পর্যন্ত বর্ণনা করেছিলেন।" (আবূ দাউদ)


হযরত আবূ হুরায়রা রা. বলতেন- "আমি রাসূলে কারীম সা.থেকে পাওয়া দুটি জ্ঞান থেকে একটিকে


প্রকাশ করে দিয়েছি আর অপরটিকে গোপন করেছি। আমার ভয় হয়- আমি যদি তা বর্ণনা করে দেই, তবে


মানুষেরা আমার দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলবে।


এ হাদিসগুলোকে আবূ হুরায়রা রা. লেখে নিয়েছিলেন। কিন্তু কিতাবটির কোন হদিস পরবর্তীতে পাওয়া যায়নি। যদিও ভবিষ্যদ্বাণী সম্বলিত বড় বড় কিতাবাদী সলফে সালেহীন কর্তৃক বর্ণিত রয়েছে। যেমন ইমাম আব্দুর রহমান বিন মাহদী কর্তৃক রচিত السنة ؤالفتن নুআইম বিন হাম্মাদ কর্তৃক রচিত الفتن আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন শাইবা কর্তৃক রচিত الفتن, খলীল বিন ইসহাক কর্তৃক রচিত الفتن আবূ উমর দানী কর্তৃক রচিত السنن ا الؤاردة في الفتن আল্লামা কুরতুবী কর্তৃক রচিত التذكرة,হাফেয ইবনে কাছীর রহ. কর্তৃক রচিত النهاجة في الفتن والمالحم এবং আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহ. কর্তৃক রচিত والاساءة في اشراط এবং  الءرف الؤردي احباب এll উল্লেখযোগ্য। শুধুমাত্র হিজরী দশম শতাব্দী পর্যন্ত এ বিষয়ে রচিত গ্রন্থাদীর সংখ্যা বাইশটিরও উপরে।


মুহাম্মদ ঈসা দাউদের মন্তব্য নষ্টারডেমাসের পিতামহের কাছে আবূ হুরায়রা রা. ঐ কিতাবটি হস্তগত হয়েছিল। পাশাপাশি নষ্টারডেমাসের উপর গবেষণাকারীগণও এ বিষয়টি মেনে নিয়েছেন যে, প্রাচীন। যুগের কিছু কিতাবাদী তার হস্তগত হয়ে গিয়েছিল।


দ্বিতীয়ত- এটিও একটি বাস্তব তথ্য যে, উম্মতে মুসলিমার জ্ঞান-ভান্ডারে ইহুদী সম্প্রদায় ডাকাতি করেছে। "হালাকো খান" কর্তৃক বাগদাদ ধ্বংসের সময় (১২৫৮) প্রত্যেক বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ কিতাবাদী


ইহুদীরা লুট করে নিয়েগিয়েছিল। ইহুদী সম্প্রদায় কর্তৃক বাগদাদের সাথে একই আচরণ সাম্প্রতিক মার্কিন আগ্রাসনকালেও করা হয়। ঐতিহাসিক জ্ঞান-ভান্ডার তারা বাগদাদের লাইব্রেরীসমূহ থেকে লুট করে নিয়ে গেছে। ঐ ইতিহাসগুলোকেই তারা নিজেদের নামে ছাপিয়ে প্রচার করেছে।


সালফে সালেহীনের কিতাবগুলোর মধ্যে- 


 ইমাম আব্দুর রহমান বিন মাহদী কর্তৃক রচিত السنة ؤالفتن নুআইম বিন হাম্মাদ কর্তৃক রচিত الفتن আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন শাইবা কর্তৃক রচিত الفتن, খলীল বিন ইসহাক কর্তৃক রচিত الفتن আবূ উমর দানী কর্তৃক রচিত السنن ا الؤاردة في الفتن আল্লামা কুরতুবী কর্তৃক রচিত التذكرة,হাফেয ইবনে কাছীর রহ. কর্তৃক রচিত النهاجة في الفتن والمالحم এবং আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহ. কর্তৃক রচিত والاساءة في اشراط এবং  الءرف الؤردي احباب অধ্যয়ন করে লেখক ধন্য হয়েছেন।


এ-সম্পর্কে জানুন -জুমার দিনের ফজিলত আমল ও আদব

এগুলো হচ্ছে ঐ সকল কিতাব, যেগুলিতে কেয়ামত পূর্ব পর্যন্তের জন্য ঘটিত সকল ঘটনাবলী সম্বলিত নবী করীম সা.এর হাদিস এবং সাহাবায়ে কেরামের আছারকে বিশালাকারে একত্রিত করা হয়েছে। এসকল কিতাব অধ্যয়নের পর যখন আপনি নষ্টারডেমাসের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পড়বেন, তখন মুহাম্মদ ঈসা দাউদের দাবী যুক্তিসঙ্গতই মনে হবে যে, নষ্টারডেমাসের ভবিষ্যদ্বাণীগুলোতে এমন কোন নতুন কথা বিদ্যমান নেই; যা উল্লেখিত কিতাবাদীর হাদিসসমূহে বা সাহাবায়ে কেরামের বাণীগুলোতে অতিবাহিত হয়নি।



এখানে নষ্টারডেমাসের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো উল্লেখ করা হচ্ছে শুধুমাত্র মুসলমানদেরকে একথার জানান দেয়ার জন্য যে, এগুলো হচ্ছে সাহাবায়ে কেরাম রা. কর্তৃক রেখে যাওয়া জ্ঞান-ভান্ডার থেকে চুরিকৃত কিছু বিদ্যা; যা নষ্টারডেমাস নিজের নামে প্রচার করার চেষ্টা করেছে। অন্যথায় মুসলমান হিসেবে একজন জ্যোতিষির কথা আমরা কখনোই বিশ্বাস করবনা। কারণ, নবী করীম সা. কোন জ্যোতিষির কথা বিশ্বাস ও তার কাছে আসা-যাওয়া করা থেকে নিষেধ করেছেন।


দাজ্জালের ব্যাপারে নষ্টারডেমাসের ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ...


Michael Nollradamas PROPHECIES,


নষ্টারডেমাস ১৫০৩ সালে "সিনেটরেমি"তে (দক্ষিণ ফ্রান্স) একটি ইহুদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। তার রচিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলো ১৫৫৫ সালে ছাপানো হয়। এর কয়েক বৎসর পূর্বে ইটালী থেকে কিছু পুস্তক প্রকাশিত হয়। আমরা "মাইকেল রেথ ফোর্ড" কর্তৃক সর্বশেষ প্রকাশিত গ্রন্থ (THE NOSTRADAMUS CODE) এর অনুবাদ পেশ করছি। এ ব্যাপারে ইহুদীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এগুলো মিথ্যা, মনগড়া ও বানোয়াট বিষয় :


5:13 আলো বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ভয়ানক মহাক্ষতিসমূহ...


তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে এমনসব অস্ত্র ব্যবহার করা হবে, যার মাধ্যমে আকাশে ভয়ানক ও বিশালাকারের ধামাকা হবে। রাত্রীকালে এক রাসায়ণিক বা লেজার অস্ত্র ব্যবহার করা হবে; মানুষের মনে হবে যেন তারা রাতে সূর্য দেখে ফেলেছে। বিস্ফোরণটি থেকে বিরাট বড় জ্যোতির সৃষ্টি হবে। (



5:14 আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে কুটনৈতিক সম্পর্কের অবসান...


শক্তিশালী অস্ত্র-সস্ত্র আবিস্কারের ফলে বিভিন্ন দেশের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছড়িয়ে পড়বে। জাতিসংঘকে খতম করে দেয়া হবে। কেননা, যে সকল দেশ শক্তিশালী অস্ত্রগুলো তৈরী করবে, তারা স্বীয় টেকনোলোজী সম্পর্কে অন্যকে অবহিত করতে চাইবেনা। এভাবেই বিশ্বব্যাপি সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়বে।


5:15 অত্যাধুনিক আলোর মাধ্যমে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ...


জ্যোতিকে ব্যবহার করে এক আধুনিক অস্ত্র তৈরী করা হবে। বিশেষ এক ফ্রিকোয়েন্সির উপর এধরনের আলো নিক্ষেপের মাধ্যমে মস্তিস্ককে কষ্টে ফেলে দেয়া হবে। যা অত্যন্ত কষ্টকর হবে এবং মানুষের মস্তিস্ককেও সম্পূর্ণরূপে অকেজো করে দেয়ার ক্ষমতা রাখবে। 


5:16 বংশ নিয়ে মানুষের গবেষণা এবং উন্নতি ...


তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে অত্যন্ত ভয়ানক বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করা হবে, যার মাধ্যমে মানুষের বংশকে পরিবর্তন করে দেয়া যাবে। গবেষণাটি বিশ থেকে শুরু হবে। বৈজ্ঞানিকগণ এ গবেষণায় লিপ্ত থাকবে যে, কিভাবে প্রাচীন যুগের যুদ্ধবাজ মানুষদের শক্তিকে পূণরায় অর্জন করা যায়!! যাতে মানুষের মস্তিস্ককে অত্যন্ত চতুরতার সাথে কাজে লাগানো যায় এবং তা রণাঙ্গনে সৈন্যদের কাজে আসে। বিভিন্ন দেশের সরকার একে যুদ্ধের মধ্যে ব্যবহার করবে। বৈজ্ঞানিকগণ সাধারণ মানুষ এবং তৈরীকৃত মানুষদের যোগ্যতাগুলোকে পরস্পর যাচাই করবে।


এসকল কার্যক্রম তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হবে। তখন রাশিয়া, চীন, আমেরিকা এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা দেখা দেবে। তাদের কাছে এ পরিমাণ স্বর্ণ বিদ্যমান থাকবে যে, এর মাধ্যমে তারা এগুলোর গবেষণার খরচ বহন করতে পারবে। একজন সন্ত্রাসবাদের গডফাদার (King of Terror) এসকল ব্যাপারকে পর্দার আড়ালে থেকে ব্যবহার করবে। ঐ গডফাদারের আয়ত্বে অত্যন্ত শক্তিশালী এবং গোপন শক্তি বিদ্যামন থাকবে এবং বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রের সরকারী ব্যবস্থাপনা তার ইশারায় পরিচালিত হবে।


বংশ নিয়ে গবেষণাকারী বৈজ্ঞানিকদের যন্ত্রণাদায়ক ও ভয়ানক মৃত্যু...


বিচ্ছিন্নতার যমানায় কতিপয় বৈজ্ঞানিক বিশেষ ধরনের এক শক্তিশালী অস্ত্র আবিস্কার করবে। নিজেদের পেট রক্ষার্থে তারা আন্তর্জাতিক যুদ্ধসমূহ থেকে অজ্ঞাত থাকবে। "বাজী উল্টে যাওয়ার পর" তারা পরাজিতদের দলে থাকবে। বিজয়ী জাতির সামনে তাদের মৌলিত্বের রহস্য উন্মুচিত হয়ে যাবে। এ ধরনের গবেষণায় কে কতটুকু অংশগ্রহণ করেছিল এর উপর ভিত্তি করে তাদের পরিণাম ধার্য করা হবে।


কয়েকজনকে যন্ত্রণাদায়ক ও ভয়ানকভাবে হত্যা করে দেয়া হবে। বিশেষত তিনজন বৈজ্ঞানিক, যাদের নামের অংশ যথাক্রমে (K) (Th) এবং (L) থাকবে, তারা রহস্যময় মৃত্যুর সম্মুখীন হবে। তাদের মৃত্যুর কারণ এই হবে যে, তারা মানুষের বংশ নিয়ে গবেষণার


ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিল। এধরনের গবেষণায় অনেক বৈজ্ঞানিকই অংশগ্রহণ করবে, তন্মধ্যে নয়জন তৃণমূল পর্যায়ের থাকবে। গবেষণাটি Os এর মধ্যে শুরু হয়ে বিচ্ছিন্নতার সময় গিয়ে পরিপূর্ণতা লাভ করবে।


 তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ :


১- ভয়ংকর যুদ্ধ, শক্তিশালী অস্ত্র ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, হাহাকার মৃত্যু...


পশ্চিমা দেশসমূহের জাগ্রত অবস্থান, বিশ্বযুদ্ধের বিষয়বস্তু পরিবর্তন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির ফলে যুদ্ধ থামানো সম্ভব হতে পারত। কেননা, যে কোন সভ্যতায় যদি ঐশী বিপদ আবর্তিত হয়, তাহলে তা যুদ্ধবিজয়ের প্রতিক্রিয়াকে হ্রাস করে দেয় এবং ঐশী বিপদাপদের কারণেও যুদ্ধ থামানো যায়। 



বিচ্ছিন্নতার যমানায় অনেক বড় বড় হুলযুদ্ধ, সামুদ্রিক যুদ্ধ এবং আকাশযুদ্ধ সংঘটিত হবে। গোপন শক্তিশালী অস্ত্র যখন জনসমক্ষে প্রকাশিত হবে, তখন তা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলবে এবং পৃথিবীকে এক মহাশংকায় ফেলে দেবে।


দাজ্জাল এধরনের ভয়ানক অস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি পরিবেশ দূষনকারী জীবাণু অস্ত্রও ব্যবহার করবে। যারফলে মানুষের মধ্যে ক্ষুধা, অভাব-অনটন এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে। এধরনের অস্ত্রগুলি অত্যন্ত বিষাক্ত এবং ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াবে। 


দাজ্জাল যখন পশ্চিমা দেশুগুলোকে আয়ত্ব করতে থাকবে, তখন রাসায়ণিক অস্ত্র পৃথিবীতে এমন ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে, যেমন- বৈদ্যুতিক কোন বস্তু মাটিতে পতিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি করে থাকে। যারফলে বিষাক্ত বৈদ্যুতিক স্ফুলিঙ্গের মত বৃষ্টি বর্ষন হবে। এমন সব হাতিয়ার, যা আমাদের কল্পনারও বাইরে। এমন হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংস ছড়িয়ে দেয়া হবে, যা পৃথিবী ইতিপূর্বে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। সর্বত্র শুধু মানুষের লাশ আর লাশ দেখা যাবে। ভূমি মানুষের এ লাশগুলো নিয়ে ক্রন্দন করতে থাকবে। দাজ্জাল এতই শক্তিশালী, চরমপন্থী এবং ভয়ানক হবে যে, বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানগণ তার ভয়ে ভীত হয়ে পড়বে। তারা দাজ্জালের বিপরীতে কিছুই করতে সক্ষম হবেনা। পৃথিবীর সকল সভ্যতা একেবারে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হবে।


যখনই দাজ্জাল কোন রাষ্ট্র আয়ত্ব করতে চাইবে, তখনই সেখানে অগণিত ও ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ ছড়িয়ে দেবে। যাতে কোনপ্রকার বাধাবিপত্তি ছাড়াই সবকিছু সে আয়ত্বে নিয়ে নিতে পারে। তার ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের সামনে পেছনের সকল ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড ছেলেখেলা মনে হবে। যেমন হিটলার রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল, দাজ্জালও রক্ত এবং দুধের সাগর বইয়ে দেবে।


২- মধ্যপ্রাচ্যে রাসায়ণিক শঙ্কা....

মধ্যপ্রাচ্যে এক মহা রাসায়ণিক (বিস্ফোরণ) শঙ্কা ভর করবে। আক্রমণকারীরা পূর্বেথেকে আক্রমণ না করার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আক্রমণ করে দেবে। তখন সেখানে অবস্থিত অন্যান্য শক্তিসমূহের সামুদ্রিক জাহাজগুলিও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। রাসায়ণিক জ্যেতি ব্যবহারের ফলে মানুষ, প্রাণী এবং ঋতুর উপর যে কুপ্রভাব পড়বে, তাতে সমুদ্রের পানি পর্যন্ত লাল হয়ে যাবে। বিশালাকৃতির অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বিস্ফোরণের মাধ্যমেও এ প্রভাব পড়তে পারে। যারফলে মানবদেহ পানির উপর সাতার কাটতে দেখা যাবে। এসকল মহাবিস্ফোরণ আর প্রাকৃতিক পরিবর্তনসমূহের ফলে সমুদ্র তার রাস্তা পরিবর্তন করে দেবে। যারফলে পৃথিবীর মাথাপিছু মানচিত্র পরিবর্তন হয়ে যাবে। ঐ সময় আমেরিকাতে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী প্রেসিডেন্ট থাকবে। সে তখন জীবনকে অবসর দেয়ার কাজে ব্যস্ত থাকবে।


3- ভূমধ্য সাগর (Mediterranean Sea ) এর গুরুত্ব এবং "জাবালে তারেক" যুদ্ধ....


ভূমধ্য সাগর প্রোগ্রাম এবং জাবালে তারেক যুদ্ধের সময় দাজ্জাল "মোনাকো" (Monaco ) দখল করে নেবে। এ জায়গাটিকে দাজ্জাল ইটালী এবং দক্ষিণ ইউরোপে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহার করবে। রাজপূত্র রেইনার'এর স্থলাভিষিক্ত (তার ছেলে)কে বিরুদ্ধাচারণের কারণে বন্দী করে ফেলা হবে।



৪- নিউয়োর্ক এবং লন্ডনে জীবাণু আক্রমণ এবং যুদ্ধ....


নিউয়োর্ক এবং লন্ডনে বায়োলোজিক অস্ত্রের মাধ্যমে আক্রমণ করা হবে, যা ওখানকার অধিবাসীদে জন্য মারাত্মক ধ্বংস ডেকে আনবে। আক্রমণটি জীবাণু বা বিষাক্ত রোগ ছড়িয়ে দেয়, এমন অস্ত্রের মাধ্যমে করা হবে। নিউয়োর্ক এবং লন্ডনে এ ভয়ানক জীবাণূ প্রসারক হাতিয়ার ছড়িয়ে দেয়া হবে। এ ধরনের অস্ত্রের অবস্থা এবং প্রকৃতি ভিন্ন রকম হওয়ার ফলে উভয় শহরেই মারাত্মক কুপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হবে যে, ওখানে মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ তা একটি সুসংগঠিত শক্তির পক্ষ থেকে নিক্ষেপ করা হবে। মারাত্মক ধরনের এক বিকট আওয়াজের ফলে ওখানকার শহরগুলোর ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে। যারা ওই শহরগুলোর আশেপাশে আবাদী থাকবে, তারা শংকা ও ভয়ের কারণে শহরগুলোতে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছানো থেকে বিরত থাকবে। যারফলে শহরের বাসিন্দারা ক্ষুধা ও অভাবের তাড়নায় ছটফট করে মৃত্যু বরণ করবে।


মানুষেরা শহরের দোকানগুলোতে আক্রমণ করে সমস্ত মালামাল লুট করে নেবে। সিপাইগণ তাদেরকে


মারধর করবে। সরকার চেষ্টা করবে যে, অবশিষ্ট খাদ্যদ্রব্যগুলোকে যাতে সঠিক রূপে বন্টন করে দেয়া হয়।


কিন্তু জনসাধারণ তড়িঘড়ি করতে চাইবে এবং খোদার কাছে সাহায্যের আবেদন জানাবে।



৫- দাজ্জাল কর্তৃক ইউরোপ দখল.…...


বিগত প্রজন্মে দাজ্জাল সারাবিশ্বের উপর শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি করে গিয়েছিল। কালের বিবর্তন পরবর্তী জীবনে তার ওই আশা বাস্তবায়ন করার অনুমতি দেয়। তার ঐ শয়তানী শক্তিকে একমাত্র পূণ্যের মাধ্যমেই থামানো সম্ভব। সে তার শক্তির সূচনা নিম্নস্তর থেকে শুরু করবে। পরে উন্নতি করতে করতে সর্বোচ্চ স্তরে উঠার চেষ্টা করবে।


মাছীহ দাজ্জাল স্বীয় শক্তিকে অন্যায়ের পথে ব্যবহার করা সত্ত্বেও সে সারা দুনিয়ার বাদশাহ হয়ে যাবে। তার শক্তি এবং ভাবমূর্তি তার নামের মাহাত্ম প্রকাশ করবে। তার নাম সম্পর্কে অনেক মানুষ জ্ঞাত থাকবে, যারা প্রাচীন যুগের ইতিহাস সমূহকে স্মরণ রাখবে।



মাছীহ দাজ্জাল হিটলার থেকেও বেশি অনিষ্টকর হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে সে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করবে। সে তার জীবনের চরম ব্যর্থতম অবস্থানে থাকবে। ঐ সময় মধ্যপ্রাচ্যে অনেক অন্যায়-অবিচার, রাজনৈতিক দলাদলি এবং অনেক কাটাছেড়া। পরিবেশগুলো তার উপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে এবং তার জন্য স্বীয় স্থানগুলো স্মরণ হতে শুরু করেছে। (2


তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে সামুদ্রিক বাণিজ্যপথ এবং সাধারণ ব্যবসা-বানিজ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থের সম্মুখীন হবে। যদিও কতিপয় রাষ্ট্রে গম-আটা ইত্যাদি যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ থাকবে, কিন্তু তা এত দর ও দামী হবে যে, ক্রয় করার সাধ্য কারো থাকবেনা। 


যে সকল রাষ্ট্রে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, সেখানে লোকেরা বেঁচে থাকার লক্ষে মানুষের গোশ্ত খাওয়া শুরু করবে। পাশাপাশি অপর কতিপয় রাষ্ট্রের কাছে গম-আটা ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকবে, কিন্তু তারা তা বিক্রি বা রপ্তানী করার সুযোগ পাবেনা। কেননা, যুদ্ধ চলাকালে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মালামাল ট্রান্সফার করার মধ্যে বিরাট ঝুকি ও প্রাণনাশের শঙ্কা রয়েছে।



সে তার সকল পদক্ষেপে সফল হতে থাকবে। কিন্তু তা ভয়ানক অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে। আর এ অস্ত্র সস্ত্র "নিউক্লিয়ার শক্তি" পরবর্তীতে কাজে লাগানোর জন্য রেখে দেবে। জীবিত লোকেরা মৃতদেরকে দাফন করার সুযোগ পর্যন্ত পাবেনা। তখন লোকেরা সম্মুখ মৃত্যু দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। তারা মৃত্যুকে ভয় করবেনা।


না গাদ্দাফী; না আয়াতুল্লাহ খামিনী দাজ্জাল। বরং সে ওখানকার সরকারী ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবে। আর এটা তার বাহিনীকে শক্তিশালী করার সাহস যুগাবে। দাজ্জাল মিসরে সার্বিক শিক্ষা গ্রহণ করবে। কেননা, তখন সেখানে সরকারী ব্যবস্থাপনা সমুন্নত থাকবে। পাশাপাশি দেশটি আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থান করছে।


তখনকার মধ্যপ্রাচ্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের পথকে প্রশস্ত করে তুলবে। বহু রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সভ্যতা বিনষ্ট হয়ে যাবে। ধর্মীয় চরমপন্থীদের (সূফীগণ নয়) কাছে শক্তি থাকবে এবং তারা নিজেদের অমানবিক কর্মকান্ডকে সত্য বলে মনে করবে। ধর্মীয় প্রভাব দাজ্জালকে শক্তি অর্জন করার সাহস যুগাবে। দাজ্জালের অনুসারীরা দাজ্জালকে ধর্মীয় পথপ্রদর্শক বলে মনে করবে।


দাজ্জাল কর্তৃক যাবতীয় মিথ্যা প্রচারণা সত্তেও সে বিশ্বকে এক মহাভূমি বানিয়ে দেবে এবং তার সকল


ষড়যন্ত্র জনসমক্ষে ফাস হয়ে যাবে। ছবির উল্টা দিক প্রকাশ হয়ে পড়বে। সে তার অনুসারীদের ধারণানুযায়ী

চলতে সক্ষম হবেনা।


রুম সাগর, লোহিত সাগর এবং আরব সাগরের বুকে দাজ্জালকে স্বীয় শক্তি প্রকাশ করতে দেখা যাবে। সে প্রচুর পরিমাণে আন্তর্জাতিক শক্তি অর্জন করে ফেলবে। বৃহস্পতিবার দিন তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। সে ঐ দিনটিকে তার উপাসনার জন্য নির্ধারণ করবে। সে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যই ভয়ানক হবে, বিশেষত প্রাচ্যের জনসাধারণের জন্য। কেননা সে চীন, রাশিয়া এবং সম্পূর্ণ এশিয়াকে হাতের মুঠোয় রাখবে। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথমবারের মত কেউ এত বিশাল ভূমিকে আয়ত্ব করতে সক্ষম হবে।


দাজ্জাল কর্তৃক আবিস্কৃত রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সভ্যতা বিশ্বের উত্তরাঞ্চলের দেশুগুলোতে


বাস্তবায়িত হতে দেখা যাবে। ওখানকার উন্নতশীল এবং ঠান্ডা পরিস্থিতির কারণে। দাজ্জাল আত্মপ্রকাশকালে সামাজিক রীতিনীতি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। মিথ্যা দাবীদার লোক প্রচুর পরিমাণে আত্মপ্রকাশ করতে থাকবে। তারা আসমানী মাযহাব এবং সত্যপথের দাবী করতে থাকবে। 


কিছু সময়ের জন্য দাজ্জালের আয়ত্বাধীন এলাকাগুলোতে যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু কিছুদিন পরেই লোকেরা তাদের স্বাধীনতাকে স্মরণ করে দাজ্জালের বিদ্রোহ করার চেষ্টা করবে। ফলশ্রুতিতে প্রচুর ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ হতে থাকবে। মানুষেরা তাদের উদ্দেশ্য অর্জনে উত্মোৎসর্গ করে দেবে। আসমানী ওহীর ভবিষ্যদ্বাণীগুলো সত্য বলে প্রমাণিত হতে থাকবে। যেমন- রক্তের নদী ঘোড়ার কোমর পর্যন্ত। তখনকার যমানা সন্ত্রাসবাদ, ব্যাপক মৃত্যু এবং অত্যন্ত ভয়ানক হবে।


দাজ্জাল বৃহস্পতিবারকে তার বিশেষ দিন হিসেবে 

ধার্য করবে। তার হাতিয়ার থেকে প্রচুর পরিমাণে হত্যা ও রক্ত বয়ে যাবে। ভয়ানক ক্ষমতাসম্পন্ন রাসায়ণিক পদার্থ ব্যবহারের ফলে বিরাট ধরনের পরিবর্তন প্রকাশিত হতে থাকবে। আকাশে, বৃক্ষসমূহে প্রাণীদের মাঝে, খাদ্যদ্রব্যের মাঝে এবং যমিনের ভেতরেও। যমানার মাঝে অনেক কষ্ট এবং ক্লান্তি বিরাজ করবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url